দর্পণ ডেস্ক : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিন সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে এবং নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হয়েছে।
বর্তমানে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করায় তার অনুপস্থিতিতেই বুধবার আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে দিনটিতে বিস্তর কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকালে ঢাকাসহ সারাদেশে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আলোচনা সভা, রক্তদান কর্মসূচি, বৃক্ষরোপণ, কেক কাটা, বস্ত্র বিতরণ, খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, আনন্দ র‍্যালি করা হয়। জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন পর্যায়েও একই কর্মসূচি পালন করা হয়।
১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের মধুমতি নদীবিধৌত টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জ্যেষ্ঠ কন্যা।
শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিন উপলক্ষে নেয়া কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, শাজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক ও আফজাল হোসেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমদ মন্নাফি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ণাঢ্য আনন্দ র‌্যালি করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হাতে ব্যানার, প্ল্যাকার্ডসহ নেত্রীকে শুভেচ্ছা বার্তা জানান তারা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে বের করে কলা ভবন প্রদক্ষিণ শেষে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে শেষ হয়। এদিকে দুপুরে উত্তরায় ফ্রেন্ডস ক্লাব মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগ শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা এবং অসহায়-দুস্থদের মধ্যে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এছাড়া কেন্দ্রীয়ভাবে বাদ জোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সকাল ১০টায় ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারে (বাসাবো, সবুজবাগ) বৌদ্ধ সম্প্রদায়, সকাল ৯টায় খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে এবং বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় বিশেষ প্রার্থনা সভার আয়োজন করে। এসব কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। সংগঠনের মহাসচিব কে এম শহিদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রমুখ বক্তব্য দেন। এছাড়া দিনটি উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে আলোচনা সভার আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট। সংগঠনের সভাপতি ফাল্গুনী হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি জাকির হোসেন বাবুলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সংসদ সদস্য হাবিব হাসান, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল প্রমুখ বক্তব্য দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে ‘হাজার লেখকের সম্মিলন ২০২২’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের আয়োজনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রকাশ পেয়েছে দেশ-বিদেশের প্রথিতযশা ৭৬ জন কবির কবিতা নিয়ে ‘বঙ্গোত্তম শেখ হাসিনাকে নিবেদিত কবিতা’ সংকলন এবং তারুণ্যে উদ্দীপ্ত লেখকদের উৎসর্গীকৃত চারশ কবির ‘নবযাত্রা’ ও ‘অগ্রযাত্রা’ নামে দুটি কবিতা সংকলন। সম্মিলনের উদ্বোধন করেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন।
শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহণের পর থেকে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দলকে সুসংগঠিত করেন এবং ১৯৯৬ সালে প্রথম, ২০০৮ সালে দ্বিতীয়, ২০১৪ সালে তৃতীয় এবং ২০১৮ সালে চতুর্থবারের মতো নির্বাচনে জয়লাভ করে প্রধানমন্ত্রী হন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।