অনলাইন ডেস্ক :গ্রীষ্মকাল মানেই রসাল ফলের মৌসুম। সবার বাড়িতেই এ সময় কোনো না কোনো মৌসুমি ফল মজুদ থাকে। আর এসব ফল যে কেবল শরীরের জন্যই ভালো তা নয়, এগুলো ত্বকও ভালো রাখে। জেনে রাখুন এমন কয়েকটি গ্রীষ্মকালীন ফলের গুণাগুণ, যা গোটা ঋতুতেই ত্বক ভালো রাখবে।

আম

সুস্বাদু এ ফলে রয়েছে কোলাজেন। এটি এমন একটি প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান, যা ত্বককে কোমল ও উজ্জ্বল করে। তাছাড়া এটি ত্বকে অকালে বয়সের ছাপ পড়া থেকে বিরত রাখে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে বিধায় তা ত্বককে ফ্রি রেডিক্যালসের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বিরত রাখে। পাকা আমের খোসা ছাড়ানোর পর তা কিছুক্ষণের জন্য ফ্রিজে রেখে দিন। এরপর সেটি মুখে ঘষে রাখুন ১০-১৫ মিনিট। এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তাত্ক্ষণিকভাবে ত্বক উজ্জ্বল ও কমনীয় করে পাকা আম।

কাঁঠাল

কাঠাল খাওয়ার সময় সাধারণত এর বিচিগুলো আলাদা করে রাখা হয়। কাঁঠালের বিচির নানা স্বাস্থ্য-উপকারিতা রয়েছে। এগুলো পরিষ্কার করে সিদ্ধ করার পর উপরের খোসা ছাড়িয়ে পেস্ট করে নিন। টকদই ও হলুদের সঙ্গে কাঁঠালের বিচির পেস্ট ভালোভাবে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। ত্বককে নিখুঁত করতে খুব ভালো ভূমিকা রাখে এ মিশ্রণ। তাছাড়া বড় হয়ে যাওয়া রোমকূপ ছোট হবে এ মিশ্রণ লাগালে।

তরমুজ

এ ফলের অধিকাংশই পানি। আর ত্বকের আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনে খুব সহজেই। তরমুজের রসের সঙ্গে সমপরিমাণ শসার রস মিশিয়ে ত্বকে লাগান। চাইলে আইসকিউব করে ব্যবহার করা যায়। ১০ মিনিট রেখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটায় ধুয়ে ফেলুন। রোদের পোড়া দাগ তুলতে নিয়ম করে এটি ব্যবহার করতে পারেন।

আনারস

ত্বকের রঙ উন্নত করতে ও উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে রোজ আনারসের জুস খাওয়া যেতে পারে। ত্বকের দাগ, ব্রণ ও বলিরেখা দূর করতে এটি কার্যকরী ভূমিকা রাখে। ত্বকের কালচে দাগ ও তিলের ওপর আনারসের রস লাগালে উপকার পাওয়া যায়। যদের ত্বক খুব স্পর্শকাতর, তারা নির্দ্বিধায় আনারস ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এর মধ্যকার ভিটামিন ‘সি’ ত্বকে আরাম দেয়। এটি অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদানযুক্ত বলে ত্বকের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।

পেঁপে

পেঁপেকে বলা হয় প্রাকৃতিক ব্লিচ, যা ত্বকের কালো দাগ ও ব্রণের দাগ দূর করে ত্বকের রঙ উন্নত করে। ত্বকের দীপ্তি ফিরে পেতে পেঁপে থেঁতো করে তাতে মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে লাগালে উপকার পাওয়া যায়। তাছাড়া ত্বকের শুষ্কতা রোধেও সহায়ক পেঁপে। মধুসমেত পেঁপে বাটা ত্বকে লাগালে ত্বক হাইড্রেটেড থাকে। যাদের মুখে প্রায়ই ব্রণ হয়, তারা পেঁপের রস আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে ১০ মিনিট রাখুন। তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

পেয়ারা

পেয়ারা ভিটামিন ‘সি’-এর খুব ভালো উৎস। ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে, ত্বকের দাগ ও বলিরেখা দূর করতে পেয়ারা খেতে পারেন। তাছাড়া পেয়ারার পাতারও বেশকিছু গুণাগুণ রয়েছে। পানিতে পেয়ারাপাতা সিদ্ধ করে তা ত্বকে লাগালে উপকার পাওয়া যায়। ত্বকের ব্ল্যাকহেডস দূর করতে পেয়ারাপাতার ঘন পেস্ট আক্রান্ত স্থানে লাগানো যেতে পারে। ত্বকের রঙ উন্নত করতে পাকা পেয়ারা বেটে তাতে ডিমের কুসুম মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। এরপর ঈষদুষ্ণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

লিচু

লিচুতে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট, ফ্লেভোনয়েড ইত্যাদি। এর মধ্যকার থিয়ামিন ত্বকের সুস্থতা ধরে রাখতে সহায়তা করে। তাছাড়া এর কপার ক্ষতিগ্রস্ত কোষের নিরাময় সাধন করে। তাছাড়া এর নিয়াসিন ত্বককে রাখে হাইড্রেটেড। রসাল বলে তা ত্বকের নমনীয়তা ধরে রাখে।

কলা

যদিও ফলটি গোটা বছরই পাওয়া যায়। তবে ফ্রুট সালাদ, স্মুদি বা লাচ্ছি তৈরির জন্য গরমের সময় ফলটি ঘরে থাকেই বৈকি! পটাশিয়াম, ভিটামিন ‘ই’ ও ‘সি’তে ভরপুর এ ফলটি ত্বকের আর্দ্রতা ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখে। কলা পেস্ট করে তাতে এক চা চামচ কাঁচা মধু ও আধা চা চামচ লেবুর রস দিয়ে নরম প্যাক তৈরি করুন। ত্বকের উজ্জ্বলতায় লাগিয়ে রাখুন ১৫-২০ মিনিট। ঠাণ্ডা পানির ঝাপটায় ধুয়ে ফেলুন।