আজ শুক্রবার তৃতীয় দিনের মতো পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে কাজে যোগ দেয়নি দেশি বিদেশি কোন শ্রমিক। তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের অভ্যন্তরে সুনশান নিরাবতা বিরাজ করছে। তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা, মালামাল লুট ও ভাংচুরের অভিযোগে অজ্ঞাত ৫/৬ শ জনকে আসামী করে চায়নিজ Consortium of China Datang Overseas Electric Technology and ½ Co. Ltd. and China National Energy ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার কলাপাড়া থানায় একজটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ বৃহস্পতিবার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৫ জনকে আটক করেছে। পুলিশের দাবী আটককৃতদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত ল্যাপটপ, কমম্পিউটার, ড্রিলসহ বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করেছেন তারা। তবে ঘটনার পর থেকে আজ শুক্রবার পর্যন্ত কোন সাংবাদিককে কেন্দ্রের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে দেয়নি কর্তৃপক্ষ।

এদিকে শ্রমিকদের দ্রুত কাজে ফিরিয়ে নিতে আজ শুক্রবার সকাল থেকে দফায় দফায় বৈঠক করেছে তাপবিদ্যুত কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ ও চায়নিজ প্রতিনিধি দল।

অপর দিকে বিদ্যুৎকেন্দের অভ্যন্তরে আটকে পরা একাধিক বাঙ্গালী শ্রমিক মোবাইল ফোনে জানান, তারা অল্প কিছু সংখ্যক শ্রমিক এখন ভেতরে অবস্থান করছেন। অধিকাংশ শ্রমিক চলে গেছেন। শ্রমিকদের খাবারের ক্যান্টিন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খাবার ও পানির সংকটে পড়েছে দেশি শ্রমিকরা। প্রধান ফটক বন্ধ থাকায় দেশি শ্রমিকরা দেয়াল টপকে তারা চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন বলে দাবী তাদের। শ্রমিকরা আরো জানান, চায়নিজরা তাদের উপর অকথ্য শারীরিক নির্যাতন করে। সামান্য ভুল হলে মারধর করে। এক দুই মিনিট দেরিতে পৌঁছলে বেতন কাটে কিন্তু সময়ের চেয়ে বেশি কাজ করিয়ে তার জন্য বাড়তি কোন মজুরি দেন না। বেতন কাটা এবং নির্যাতন নিয়ে দেশী শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ছিলো।

কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান,বৃহস্পতিাবর দুপুরে অজ্ঞাত ৫/৬শ জনকে আসামী করে চায়নিজ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান করাপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। ইতিমধ্যে ১৫ জন দেশি শ্রমিকে আটক করা হয়েছে। তাদের কোথা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা জানাতে পারেননি তিনি। তবে পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সুত্র জানায়, এদের মধ্যে ১৩ জনকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ এবং দুই জনকে পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র সংলগ্ন ধানখালী থেকে আটক করে পুলিশ।

জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির সভাপতি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট নুরুল হাফিজ জানান, তিনি ইতিমধ্যে তদন্ত কাজ শুরু করেছেন। আজ শুক্রবার বিকেলে তিনি সরেজমিন স্বাক্ষী নেয়ার জন্য পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের অভ্যন্তরে যাবেন। সেখানে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য শুনবেন তিনি।

জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী মোবাইল ফোনে জানান, তিনি তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের অভ্যন্তরে সকল পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করছেন। যত দ্রুত সম্ভব শ্রমিকদের কাজে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে বলে দাবী করেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের অভ্যন্তরের পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে বলে দাবী করেন তিনি।