বরগুনার সামান্য এক ছিঁচকে চোরের শখ হল বিখ্যাত রহস্য অভিনেতা জেমস বন্ড হওয়ার।
কাকের ময়ুর পুচ্ছ লাগানোর মত অবস্থা। জেমস বন্ড এর হতে তার নামের সাথে জুরেছেন বন্ড পদবি। হ্যাঁ নাম সে করেছে তবে কুখ্যাত হিসেবে।

সাব্বির আহম্মেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড। বরগুনায় মো. শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যার মূল আসামি হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে তাকে।

বরগুনায় সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা ঘটনার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ নয়ন একজন ছিঁচকে চোর ছিল। মাদক সেবনের টাকা জোগাড় করতে সে চুরি ও পরে ছিনতাইয়ের কাজে লিপ্ত হয়। একপর্যায়ে শুরু করে মাদক ব্যবসা। এরপর বিভিন্ন মহলের যোগসাজশে হয়ে উঠে এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী।

বরগুনা সদর থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘নয়নের বিরুদ্ধে মাদক, চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে ১০টির বেশি মামলা রয়েছে।’

নাম প্রকাশ করার না শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, পৌর শহরের বিকেবি রোডের ধানসিঁড়ি এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকীর ছেলে নয়ন বাসায় বসেই মাদকের ব্যবসা চালাতো। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য সে সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলে। এই বাহিনী মাদক বিক্রিসহ এলাকায় চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িত।

তারা আরও জানান, এক বছর আগে বাকিতে সদাই বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় বিকেবি রোডের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নয়া মিয়ার পা ভেঙে দেয় নয়ন। প্রায় একই সময়ে তাকে তার বাসা থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ইয়াবা এবং দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এই মামলায় কিছুদিন কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্তি পেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে নয়ন। কোনও রাজনৈতিক পদ-পদবি না থাকলেও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক এমপি ও বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে ছাত্রলীগ নামধারী রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীদের সঙ্গে চলাফেরা করায় কাউকেই পরোয়া করছিল না নয়ন। এ হত্যা মামলায় নয়নের সঙ্গে এ দুই ভাইকেও আসামি করেছেন নিহত রিফাত শরীফের বাবা মো. আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ।

মিন্নি এবং আরেক যুবকের বাধা উপেক্ষা করেই রিফাতকে কোপায় নয়ন ও রিফাত ফরাজী

তবে বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘ভায়রার ছেলে রিফাত নেশা ও ছিনতাই করে। ওর সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। সুতরাং রিফাত ও তার বন্ধু নয়নকে প্রশ্রয় দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।’

বরগুনা সদর থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘নয়ন যখনই কোনও অপরাধ করেছে, পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু কিছুদিন পর জামিনে বের হয়ে এসে সে ফের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। তার বিরুদ্ধে মাদক, চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে ১০টির বেশি মামলা রয়েছে।’

বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, ‘দিনরাত রিফাত হত্যাকাণ্ড নিয়ে কাজ করছি। এ হত্যার ঘটনায় ইতোমধ্যে মামলার এজাহারনামীয় চার নম্বর আসামি চন্দন ও নয় নম্বর আসামি মো. হাসানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।’