গোফরান পলাশ, পটুয়াখালী : কুয়াকাটায় প্রেমিকের সাথে দেখা করতে এসে এক তরুণী গনধর্ষনের শিকার হয়েছে। রবি ও সোমবার কুয়াকাটার আবাসিক হোটেল ’যমুনা’ ও ’বেঙ্গল গেষ্ট হাউজ’ নামের দুইটি হোটেলে গনধর্ষনের এ
ঘটনা ঘটে ।

মহিপুর থানা পুলিশ মঙ্গলবার সকালে হোটেল বেঙ্গল গেষ্ট হাউস থেকে ধর্ষিতা ওই গার্মেন্টস কর্মীকে উদ্ধার করে এবং এ ঘটনার সাথে জড়িত ৫জনকে আটক করে। আটককৃতরা হলো মো. আলমগীর হোসেন (৪২), মো. রুবেল চৌকিদার
(৩৫), বেঙ্গল গেষ্ট হাউজের ম্যানেজার মো. সাইদুর রহমান সুমন (৩৫) ও তার সহযোগী মো. খলিলুর রহমান (৩৫) এবং যমুনা গেষ্ট হাউজের ম্যানেজার মো. সাইফুল ইসলাম (৫২)। আটককৃতদের বাড়ী মহিপুর থানার বিভিন্ন এলাকায়।

এদের বিরুদ্ধে ভিকটিম ওই গার্মেন্টস কর্মী বাদী হয়ে মহিপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছে। পুুলিশ ও মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের ওই গর্মেন্টস কর্মী এক তরুণীর সাথে কুয়াকাটার অধিবাসী মো. শহিদুলের মোবাইল ফোনের কথোপকথনে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। পরে শহিদুল তাকে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসতে বললে ৭ অক্টোবর সে কুয়াকাটায় আসে। কুয়াকাটার
বিভিন্ন স্পট ঘুরে রাতে শহিদুল কুয়াকাটার ইলিশ পার্ক সংলগ্ন তার এক বন্ধুর ভাড়াটিয়া বাড়ীতে নিয়ে গেলে তাকে ওই বাড়ীতে আশ্রয় দেয়নি তার বন্ধু।

এসময় শহিদুল নিজে তার প্রেমিকাকে বাসে তুলে না দিয়ে স্থানীয় আলমগীর হোসেন’র কাছে তাকে তুলে দিয়ে ঢাকার গাড়ীতে উঠিয়ে দিতে বলে। এরপর আলমগীর তাকে রাতের অজুহাত দেখিয়ে গাড়ীতে না উঠিয়ে দিয়ে স্থানীয় আবাসিক হোটেল যমুনার ১০ নং কক্ষে থাকার ব্যবস্থা করেন। পরে হোটেল কক্ষে আটকিয়ে আলমগীরের সহযোগী সাইফুল ইসলাম ও আলমগীর তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে পালাক্রমে ধর্ষন করে। পরের দিন সোমবার স্থানীয় এক প্রভাবশালীর মোটরসাইকেল চালক খ্যাত খলিলুর রহমান তাকে কুয়াকাটার ’বেঙ্গল গেষ্ট হাউস’ হোটেলের ১০ নং কক্ষে নিয়ে আটকে রেখে সকল আসামীরা পালাক্রমে ধর্ষন করে ।

এতে ভিকটিম জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে মহিপুর থানা পুলিশ খবর পেয়ে বেঙ্গল গেষ্ট হাউসের ১০ নং কক্ষ থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করে আসামীদের গ্রেফতার করে।

পটুয়াখালী পুলিশ সুপার মাঈনুল হোসেন বলেন, ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়েছে। ধর্ষকদের উপযুক্ত বিচারের জন্য সব রকম আইনী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এদিকে স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, এ ঘটনার সাথে স্থানীয় প্রভাবশালীরা জড়িত রয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না কেউ। তারা বেঙ্গল গেষ্ট হাউজে দালাল চক্র দিয়ে এমন ঘটনা অহরহ ঘটাচ্ছেন। রহস্যজনক কারনে এতদিন কোন ঘটনা প্রকাশ না পেলেও এই প্রথম একটি ঘটনা পুলিশ উদঘাটনে সক্ষম হওয়ায় মহিপুর থানা পুলিশকে তারা সাধুবাদ জানিয়েছেন। পাশাপাশি প্রেমিক শহিদুল সহ অন্যান্য অপরাধীর কঠোর শাস্তি দাবী করেছেন।